Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
দেশ বিদেশের খবর
বিস্তারিত
চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ ভাগ ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্ভব
আজ বিশ্ব ক্যান্সার দিবস
নিখিল মানখিন ॥ দেশে বিভিন্ন ক্যান্সারে মৃত্যুহার অন্য সব দেশের তুলনায় অনেক বেশি। দেশে প্রায় ১২ লাখের বেশি মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত। এর শতকরা ৪০ থেকে ৫০ ভাগ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। প্রতি বছর নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় ২ লাখ রোগী। বর্তমানে ক্যান্সার রোগীর মৃত্যু হার শতকরা ৮ ভাগ। আগামী ২০৩০ সালে এ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ১৩ ভাগ হবে। সারাদেশে সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে বিপুলসংখ্যক রোগীর চিকিৎসা ব্যবস্থা খুবই অপ্রতুল। ব্যয়বহুল হওয়ায় চিকিৎসার অভাবে অনেক রোগী অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। শুধু তাই নয়, বাঁচানোর চেষ্টা করতে গিয়ে অনেক পরিবার আর্থিকভাবে নি:স্ব হয়ে পড়ে। ক্যান্সার সম্বন্ধে সঠিক তথ্য পরিবেশনের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে। মন থেকে ক্যান্সার ভীতি দূর করতে হবে। ক্যান্সার চিকিৎসায় বাংলাদেশ এগিয়েছে। দক্ষ চিকিৎসক আছেন, ওষুধ আছে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অত্যন্ত ব্যয়বহুল। উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে থেকে যাচ্ছে। এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে আজ মঙ্গলবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব ক্যান্সার দিবস।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, ব্যয়বহুল চিকিৎসা হওয়ায় হাজার হাজার ক্যান্সার রোগী অকালে মৃত্যুর কাছে পরাজয় বরণ করে। চিকিৎসা করাতে গিয়ে আর্থিকভাবে নি:স্ব হয়ে পড়ে রোগীর পরিবার। পৃথিবীতে মৃত্যুর দ্বিতীয় কারণ হিসেবে ক্যান্সারকে ধরা হয়। বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত। প্রতিবছর মারা যায় প্রায় ৭০ লাখ মানুষ। পৃথিবীতে যত মৃত্যু হয় তার প্রায় শতকরা ১৩ ভাগ ঘটে ক্যান্সারের কারণে। প্রতিবছর ফুসফুসের ক্যান্সারে ১৩ লাখ, পাকস্থলীর ক্যান্সারে ৮ লাখ, মলদ্বারের ক্যান্সারে ৬ লাখ ৩৯ হাজার এবং স্তন ক্যান্সারে মারা যায় ৫ লাখ ২০ হাজার মানুষ। আর বাংলাদেশে প্রতি হাজারে ১ দশমিক ৮ জন আক্রান্ত হচ্ছে এবং মারা যাচ্ছে ১ দশমিক ৩ জন। দেশে ফুসফুস ক্যান্সার, মুখ ও মুখগহ্বর ক্যান্সার (জিহ্বা, মাড়ি, ঠোঁট, মুখ ইত্যাদি ক্যান্সার), স্বরনালি ক্যান্সার এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে আলাদাভাবে জরায়ু মুখের ক্যান্সার ও স্তন ক্যান্সারেও মৃত্যুর সংখ্যা সর্বাধিক লক্ষ্য করা যায়। ক্যান্সারে ক্রমবর্ধমান মৃত্যু রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রতিরোধের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণকল্পে বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে ক্যান্সার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ নামে নীতি প্রণয়ন করা হয়।
জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক শেখ গোলাম মোস্তফা জানান, সরকারের জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটসহ আটটি মেডিক্যাল কলেজ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যান্সার চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু অল্পস্বল্প যন্ত্রপাতি দিয়ে ১২ থেকে ১৩ লাখ ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। আর জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউটে শয্যাসংখ্যা ১৫০। গড়ে প্রতিদিন বহিঃবিভাগে ৫০ জন নতুন রোগী, ৪ থেকে ৫শ’ পুরানো রোগী আসে। বছরে হাসপাতালে চিকিৎসা নেয় ১ লাখ রোগী। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ও রেডিওথেরাপি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোয়াররফ হোসেন জানান, প্রতি ১০ লাখে একটি সেন্টার থাকা বাঞ্ছনীয়, সে হিসেবে গোটা দেশে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান থাকা দরকার ১৬০টি, আছে মোট ২০টি কেন্দ্র। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ দুটি কোবাল্ট মেশিন ও ১টি লিনিয়াক এসকেলেটর সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চালাচ্ছে। প্রতিদিন পৌনে ৩শ’ রোগী রেডিওথেরাপি নেয়, বহিঃবিভাগে প্রতিদিন ১শ’ জন রোগী আসে , ১০ থেকে ১৫ জন ডে-কেয়ারে সেবা নেয়। জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউটের মেডিক্যাল অনকোলজি বিভাগের প্রধান পারভীন সাহিদা আক্তার জানান, ক্যান্সারের চিকিৎসায় রোগীর জন্য বিপুলসংখ্যক নার্সের প্রয়োজন হয়। অথচ তাঁদের হাসপাতালে চিকিৎসকের চেয়ে নার্সের সংখ্যা কম। তিনি আরও বলেন, লিনিয়াক এসকেলেটর দামি যন্ত্র। এর পরিবর্তে কম মূল্যে কোবাল্ট মেশিন কিনে জেলা শহরগুলোয় চিকিৎসাসেবা দেয়া যতে পারে। অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছেন ঢাকায়। তাঁরাও নিয়মিতভাবে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে গিয়ে চিকিৎসাসেবা দিতে পারেন।
ছবি
ডাউনলোড